কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে কমছে পর্যটক

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে এখন চলছে পর্যটনের মৌসুম। করোনা প্রতিরোধে আবাসিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পক্ষে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও, করোনাভাইরাসের প্রভাবে আশানুরূপ পর্যটক আসছেন না এখন। তবে এই অবস্থা বিরাজ করলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে মনে করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

কক্সবাজারে রয়েছে চার শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস, রিসোর্ট ও কটেজ। এরমধ্যে অভিজাত হোটেল রয়েছে ৩০টির বেশি। এখন করোনাভাইরাস থেকে রক্ষায় এসব অভিজাত হোটেলে প্রবেশের সময় প্রত্যেক পর্যটককে স্যানিটাইজারে হাত পরিষ্কারসহ নেওয়া হয়েছে নানা সতর্কতা।

এদিকে এখন পর্যটনের ভরা মৌসুম। অন্যান্য বছর এই সময়ে কক্সবাজারে পর্যটকে ভরা থাকলেও, এবারের চিত্র ভিন্ন। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে কক্সবাজারে আসা কমিয়ে দিয়েছেন পর্যটকরা। আবার অনেকেই বাতিল করেছেন হোটেলের অগ্রিম বুকিং।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী পয়েন্টে স্বল্পসংখ্যক পর্যটক দেখা গেলেও সী-গাল, শৈবাল, মাদরাসা ও ডায়াবেটিস পয়েন্টে পর্যটনশূন্য। সৈকতের বালিয়াড়িতে খালি পড়ে আছে কিটকটগুলো। হকার ও ফটোগ্রাফাররা বেকার সময় পার করছেন।

সী-গাল পয়েন্টের কিটকট ব্যবসায়ী শফিক বলেন, ‘চলতি মাস থেকে সৈকতে পর্যটক আসা কমে গেছে। যেখানে এই পয়েন্টে ২০টি কিটকট (ছাতা) এ পর্যটকদের বসার জন্য জায়গা দিতে পারতাম না। এখন এই কিটকটগুলো খালি পড়ে আছে; ব্যবসাও হচ্ছে না।’

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত কক্সবাজারে পর্যটন মৌসুম। এ সময়ে পর্যটকের আনাগোনায় মুখর থাকে সমুদ্রসৈকতসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো। প্রতিদিনই বেড়াতে আসে অন্তত ৫০ হাজারেরও বেশি পর্যটক। দেশে শনাক্তের হার ও জুলাই মাসের চেয়ে বেশি সংক্রমণ হওয়ায় মৌসুমেও কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকের ঢলে ভাটা পড়েছে।

করোনার প্রভাবে কক্সবাজারে এখন হোটেল কক্ষের বুকিং অনেকখানি কমেছে বলে মন্তব্য তারকামানের হোটেল সুইট সাদাফ ব্যবস্থাপক (অর্থ) সোহাগ । তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে হোটেল কক্ষের বুকিং এখন তুলনামূলক কমে গেছে। পর্যটন মৌসুমের এ সময়ে গত বছরগুলোর চেয়ে কক্সবাজারে এ বছর পর্যটকের আনাগোনা কম রয়েছে। ইতোমধ্যে বেড়াতে আসতে ইচ্ছুক অনেক পর্যটক হোটেল কক্ষের অগ্রিম বুকিং বাতিল করেছেন বলে জানান হোটেলের এ ব্যবস্থাপক।

এদিকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসতে ইচ্ছুক পর্যটকরা হোটেল কক্ষ বুকিং দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে করোনাভাইরাসের কারণে এখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে কি না তা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান হোটেল সী গাজীপুর রিসোর্ট মালিক জাব্বার।

তিনি বলেন, হোটেল কক্ষ বুকিং নিতে ইচ্ছুক পর্যটকসহ কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক খাতে কম-বেশি এখন আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনাভাইরাসের প্রভাব নিয়ে। বিদেশিদের আনাগোনার পাশাপাশি প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক পর্যটক বেড়াতে আসার কারণে মানুষের মাঝে কিছুটা হলেও ভীতির সঞ্চার হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক খাতের ওপর।

ট্যুর অপারেটর (টুয়াক) সভাপতি আনোয়ার হোসেন জানান, কক্সবাজার বর্তমান করোনার শনাক্তের হার ৩২ শতাংশের ওপরে। গত বছরের তুলনায় এই বছর করোনা শনাক্তের হার বেশি। তাই পর্যটক খাতে প্রভাব পড়েছে। পর্যটকরা রব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ঢাকা পোস্টকে জানান, সমুদ্রসৈকতে পর্যকদের মাস্ক পরিধান করার জন্য টুরিস্ট পুলিশ মাইকিং করে যাচ্ছে সবসময়। মাক্স ছাড়া কেউ যেন সৈকতে নামতে না পারে সেদিকে টুরিস্ট পুলিশ কঠোরে আছে।

পাঠকের মতামত: